Sunday, March 13, 2011

গাদ্দাফিনামা - গৌতম চক্রবর্তী

গাদ্দাফিনামা
একটি মানুষ যখন একটি দেশ হয়ে উঠতে চান, তখন তৈরি হয় ইতিহাসের এক বিচিত্রতম
অধ্যায়। তেমনই এক আশ্চর্য একনায়কের জীবন কিস্‌সা বলছেন গৌতম চক্রবর্তী
ই আসছেন তিনি! সাম্রাজ্যবাদীদের চক্রান্ত তছনছ করে, দেশে ফিরে আসছেন জাতীয় বীর আবদেল বাসেত আল মাগরাহি। এত রাতেও বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়ানো ভিড়টা গর্জন করে উঠল। বিমান ততক্ষণে থামার দৌড় শুরু করেছে।
২০ অগাস্ট,২০০৯। ত্রিপোলির বিমানঘাঁটিতে প্রাইভেট জেট থেকে নেমে এলেন আল মাগরাহি। তাঁর সঙ্গে সাইফ আল ইসলাম আল গাদ্দাফি। লিবিয়ার একচ্ছত্র নেতা মুয়াম্মর গাদ্দাফির ছেলে সাইফ ডিউক অভ ওয়েলিংটনের ব্যক্তিগত বন্ধু, লণ্ডন স্কুল অভ ইকনমিক্স থেকে ডক্টরেট করেছেন। স্কটল্যাণ্ড থেকে জাতীয় বীরকে দেশে ফিরিয়ে আনলেন তিনি। সেখানেই বন্দি ছিলেন আল মাগরাহি! সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসছেন সাইফ আর আল মাগরাহি। এবং তার পরই চমক! জাতীয় বীরের জন্য অপেক্ষা করছেন মুয়াম্মার গাদ্দাফি স্বয়ং! আল মাগরাহিকে জড়িয়ে ধরলেন তিনি। কে না জানে, বিপ্লব চিরস্থায়ী! ছোট্ট দেশ লিবিয়ায় প্রতিটি সেতু থেকে রাস্তাঘাটের হোর্ডিং, ট্রাকের পিছনে সর্বত্র মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছবি। নিচে তাঁর বাণী: বিপ্লব চিরস্থায়ী।
 
আর কয়েক দিন পরেই, ১ সেপ্টেম্বর সেই চিরবিপ্লব-এর ৪০ বছর পূর্তি! ১৯৬৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই মুয়াম্মার গাদ্দাফি ও সেনাবাহিনীর বিদ্রোহে সরে যেতে হয়েছিল লিবিয়ার রাজা প্রথম ইদ্রিসকে। অসুস্থ রাজা তখন তুরস্কে, সেই সুযোগে ২৭ বছরের গাদ্দাফির ক্ষমতা দখল। দুনিয়ায় হিটলার, স্তালিন, মাও জে দং... কেউই টানা চার দশক এ ভাবে ক্ষমতায় থেকে যেতে পারেননি, একই সঙ্গে মানুষের নেতা এবং ভাই হয়ে উঠতে পারেননি। প্রায় ৬৫ লক্ষ মানুষের দেশ লিবিয়ায় গাদ্দাফিকে ওই নামেই সকলে চেনে: ব্রাদার লিডার!